আপনি কেন জীবিত - জীবন, শক্তি এবং এটিপি? | Kurzgesagt

ভিডিও

ট্রান্সক্রিপ্ট

ঠিক এই মুহূর্তে, তুমি জীবন মৃত্যুর এক সংকীর্ণ ছাঁচের উপর আছো।

তুমি হয়তো এটা অনুভব করছো না,

কিন্তু তোমার অভ্যন্তরে অবিশ্বাস্য পরিমাণ কর্মযজ্ঞ চলছে।

এই কর্মযজ্ঞ কখনও থেমে থাকে না।

নিজেকে উর্দ্ধমুখী চলন্ত সিঁড়ির মাঝে একটি পতনশীল স্লিংকি হিসেবে কল্পনা করো।

পতনশীল অংশ তোমার কোষের স্ব-বিভাজন প্রক্রিয়াকে নির্দেশ করে।

চলন্ত সিঁড়ি নির্দেশ করে তোমাকে এগিয়ে নেওয়া পদার্থবিদ্যার সূত্রকে।

বেঁচে থাকা মানে গতিশীল থাকা কিন্তু কোন গন্তব্যে পৌঁছানো নয়।

যদি চলন্ত সিঁড়ির চূড়ায় পৌঁছে যাও, আর কোন পতন সম্ভব নয়,

এবং তুমি চিরকালের জন্য মৃত।

খানিকটা অসতর্কভাবে, মহাবিশ্বও চায় তুমি চূড়ায় পৌঁছাও।

কীভাবে তা এড়িয়ে যাবে? আর কেনইবা তুমি জীবন্ত?

অনুবাদ আয়োজনে মঈনুল হাসান।

সকল প্রাণ কোষ দিয়ে তৈরি।

কোষ হলো মৃত মহাবিশ্বের অংশ…

এটি বাকি অংশ থেকে পৃথক থাকে…

যেন কিছু সময় নিজের কাজ করতে পারে।

এই বিভাজন ভেঙে গেলে এটা মরে গিয়ে পুনরায় মৃত মহাবিশ্বে মিশে যায়।

দুর্ভাগ্যবশত, মহাবিশ্ব তার আপন কাজ করতেই পছন্দ করে।

কোন কারণে, এটা রোমাঞ্চকর কাজের ভক্ত না, যতটা সম্ভব একঘেয়ে কাজ করে।

আমরা যাকে বলি “এন্ট্রপি” আর এটাই মহাবিশ্বের মৌলিক নীতি।

বিষয়টি বেজায় জটিল আর অজ্ঞাত,

তাই আমরা এটি অন্য ভিডিয়োতে বিস্তারিত ব্যাখ্যা করবো।

আপাতত, এটুকু জানলেই হবে,

জীবিত জিনিস স্বভাবতই রোমাঞ্চকর।

কোষ বহু মিলিয়ন আমিষ এবং জলের মত সহস্র মিলিয়ন সরল অনু দিয়ে তৈরি।

হাজারো জটিল ও স্ব-প্রতিলিপন প্রক্রিয়া প্রতি সেকেন্ডে হাজারো বার ঘটে চলেছে।

জীবিত আর রোমাঞ্চকর থাকার জন্য,

একে সর্বদাই কাজ করতে হয় যেন এন্ট্রপিতে পৌঁছে একঘেয়ে হয়ে মারা না যায়।

কোষকে বাকি মহাবিশ্ব থেকে পৃথক থাকতে হয়।

এই কাজই করছে, যেমন, ভিতরে এবং বাইরে নির্দিষ্ট অনু সমূহের ঘনত্বের পার্থক্য বজায় রাখছে

সক্রিয়ভাবে অতিরিক্ত অনু-সমূহকে বের করে দেওয়ার মাধ্যমে।

এমন কাজের জন্য কোষের প্রয়োজন শক্তি।

এই মহাবিশ্বে কাজ করার সামর্থ্য হলো শক্তি,

পরিবর্তনের জন্য কোনকিছু নাড়ানো বা হস্তক্ষেপ করা।

এই সামর্থ্যকে সৃষ্টি বা ধ্বংস করা যায় না।

মহাবিশ্বের মোট শক্তির পরিমাণ কখনও পরিবর্তীত হয় না।

আমরা জানি না কেন, তবে এটাই সত্যি।

কয়েক বিলিয়ন বছর পূর্বে, প্রথম জীবিত সত্তার জন্য গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ ছিল ব্যবহারযোগ্য শক্তি আহরণ।

প্রথম কোষের ব্যাপারে আমরা বেশি কিছু জানি না,

শুধু জানি তারা সরল রাসায়নিক বিক্রিয়া হতে শক্তি পেতো।

তারা চূড়ান্ত শক্তি রূপান্তর প্রক্রিয়া খুঁজে পায়: জীবনের সক্রিয় কাঠামো খণ্ড।

এডেনসিন ট্রাই ফসফেট অনু, বা ATP.

শক্তি গ্রহণ এবং বর্জনের জন্য অনুটির কাঠামো বিশেষ ভাবে উপযোগী।

কোষের শক্তি প্রয়োজন হলে,

উদাহরণস্বরূপ, অনু সমূহকে বাহির করা বা ভাঙা যন্ত্র মেরামত করার জন্য,

এটা ATP ভেঙ্গে রাসায়নিক শক্তি দিয়ে কাজ এবং পরিবর্তন করে।

এই কারণেই জীবিত জিনিস কাজ করতে পারে।

আমরা সঠিক জানি না, কখন বা কীভাবে পৃথিবীতে প্রথম ATP তৈরি হয়েছিল।

কিন্তু আমাদের জানা সকল জীবিত বস্তু তাদের অভ্যন্তরীণ যন্ত্রপাতি চালাতে ATP ব্যবহার করে।

প্রায় সকল প্রক্রিয়ার জন্য এটি অপরিহার্য।

বৃক্ষ, ছত্রাক, ব্যাকটেরিয়ার বাঁচার জন্য।

ATP ছাড়া, পৃথিবীতে প্রাণের অস্তিত্ব অসম্ভব।

হয়তো কোথাও সম্ভব না।

যদিও শক্তির জন্য ক্যামিকেল ভাঙাটা দারুণ কাজ,

আদি প্রাণ বিশাল শক্তির উৎসকে ব্যবহার করতে পারেনি:

সূর্যকে।

সূর্য পরমাণু সংযুক্ত করার মাধ্যমে ফোটন বিকিরণ করে যা সৌরজগতে শক্তি পরিবহন করে।

কিন্তু এই শক্তি কাঁচা এবং দুষ্পাচ্য।

এটাকে পরিমার্জন করা প্রয়োজন।

শত শত মিলিয়ন বছর পর, অবশেষে, একটা কোষ সূর্যের আলো গ্রহণের উপায় খুঁজে পায়।

এটা বিকিরণ শোষণ করে খাঁটি রাসায়নিক প্যাকেজে রূপান্তরিত করে এবং বাঁচার জন্য ব্যবহার করে।

আমরা এই প্রক্রিয়াকে বলি: সালোকসংশ্লেষণ।

তুমি ফোটন গ্রহণ করো যা তড়িচ্চুম্বকীয় শক্তির সাথে স্পন্দিত হয়,

এই শক্তির কিছু অংশ দিয়ে বিভিন্ন অণু সংযুক্ত করো।

তড়িচ্চুম্বকীয় শক্তি রাসায়নিক শক্তিতে রূপান্তরিত হয়ে ATP অনুতে জমা হয়।

প্রক্রিয়াটি আরও উন্নত হয়, কিছু কোষ আরও ভালো রাসায়নিক প্যাকেজ বানাতে শিখে ফেলে:

গ্লুকোজ, অথবা স্যুগার।

ভাঙতে সহজ, অধিক শক্তি সম্পন্ন, এবং সুস্বাদুও বটে।

এটা এতই উপকারী যে, কিছু কোষ সিদ্ধান্ত নেয় সালোকসংশ্লেষণের মত বিরক্তিকর কাজের পরিবর্তে,

তারা কেবল অন্য কোষদের খেয়ে তাদের শর্করা এবং ATP নিয়ে নিবে।

এটা বিবর্তনমূলক ইতিহাসে সবচেয়ে বড় এনিমে বিশ্বাসঘাতকতা হিসেবে বিবেচিত হলো।

এভাবেই সবকিছু চলতে থাকে।

সালোকসংশ্লেষণকারী কোষ তাদের উপরিতল থেকে শক্তি আহরণ করতো,

যা তাদের সর্বোচ্চ শক্তি উৎপাদন নিয়ন্ত্রণ করতো,

তাদের বিবর্তনমূলক প্রক্রিয়াও কিছুটা নিয়ন্ত্রণ করতো।

সময় অতিবাহিত হতে থাকে।

কিছু কোষ স্যুগার তৈরি করতো, অন্যরা তাদের খেতো।

বিবর্তন তার কাজ করেছে, কিন্তু সামগ্রিকভাবে শত শত লক্ষ লক্ষ বছর ধরে বিষয়টা একই রকম ছিল।

যতক্ষণ না একদিন, একটা কোষ অন্যটাকে খেয়ে ফেলে এবং মেরে ফেলেনি।

এর পরিবর্তে, তারা একটি কোষে পরিণত হয়ে গেল।

সেদিন কিছুই বদলায়নি, কিন্তু পৃথিবীটা চিরদিনের মতো পাল্টে গেল।

এই কোষটি হয়ে গেল এই গ্রহের সকল প্রাণীর পূর্বপুরুষ।

নীল তিমি, অ্যামিবা।

ডাইনোসর, জেলিফিশ।

পিঙ্ক ফেয়ারি আর্মাডিলো, সুন্দা কোলুগোস।

এবং অবশ্যই, তুমি।

এই মুহূর্তটাতেই সবাই তাদের অস্তিত্ব খুঁজে পেতে পারে।

দুইটি জীবের একীভূত হওয়াটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ,

কারণ যখন দুটি কোষ এক হতো, ওরা অনেক শক্তিশালী হয়ে উঠতো।

পূর্বের স্বাধীন কোষটি ভিতরে গিয়ে, বেঁচে থাকার লড়াই থামাতে পারতো।

নির্দিষ্ট বিষয়ে নিবিষ্ট হতে পারতো: ATP তৈরিতে।

এটা হয়ে গেলো কোষটির পাওয়ার হাউজ: প্রথম মাইটোকন্ড্রিয়া।

পোষক কোষের কাজ হলো বিপদজনক দুনিয়ায় বেঁচে থাকা,

এবং মাইটোকন্ড্রিয়াকে খাদ্য সরবরাহ করা।

মাইটোকন্ড্রিয়ার কাজ মূলত সালোকসংশ্লেষণের বিপরীত: একই রকম জটিল প্রক্রিয়া।

ওরা স্যুগার অনু নেয় যা আমরা অন্য জীবদের খেয়ে পাই,

সেগুলো এবং পূর্ববর্তী অণুগুলিকে অক্সিজেনে দহন করে,

অধিক শক্তিসম্পন্ন নতুন ATP তৈরি করে।

এই প্রক্রিয়াটি ছোট অগ্নিকুণ্ডের মতো এবং বর্জ্য পদার্থ হিসেবে CO₂ নিঃসরণ করে,

পানি, এবং অল্প পরিমাণে গতিশক্তি যা তুমি শারীরিক উষ্ণতা হিসেবে অনুভব করো।

শ্রমের এই প্রথম বিভাগে, নতুন কোষ পূর্বের যে কোন কোষের চেয়ে অনেক বেশি শক্তি পেলো,

যার ফলে বিবর্তনের জন্য আরও জটিল কোষ তৈরির সম্ভাবনা তৈরি হলো।

এক পর্যায়ে, এই কোষগুলো ছোট দল বা সম্প্রদায় তৈরি করতে লাগলো,

যা বহুকোষীয় জীব তৈরির পথে অগ্রসর হলো, পরিশেষে তোমার দিকে।

আজ, তুমি হলে বহু ট্রিলিয়ন কোষের স্তুপ, প্রতিটিতে আছে ডজন, নয়তো

শত শত যন্ত্র যেগুলো তোমাকে বেঁচে থাকার জন্য শক্তি সরবরাহ করে।

যদি এই প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হয়, কয়েক মিনিটের জন্য হলেও, তুমি মারা যাবে।

(কুর্জগেসাগট টিজার: বিজ্ঞান যুদ্ধ, ২০২১ সালে আসছে।)

প্রাণ যদি এতই ভঙ্গুর হয়,

তাহলে ATP সঞ্চিত রাখাটাই কি বুদ্ধিমানের কাজ নয়,

যেভাবে চর্বি কোষে স্যুগার রাখি,

যেন আমরা কিছুক্ষণ শ্বাস না নিয়ে বাঁচতে পারি?

প্রাণ যদি আজ তোমাকে বাঁচাতে এতো সমস্যার সমাধান করে থাকে,

তাহলে কিছু জীব দ্রুত মরে কেন?

এমনকি ই. কোলাই এর মত ক্ষুদ্র ব্যাকটেরিয়াও

প্রতিবার কোষ বিভাজনে দেহের ওজনের ৫০ গুন বেশি ATP তৈরি করে।

তোমাকে বাঁচিয়ে রাখতে তোমার বহু ট্রিলিয়ন কোষেরও ATP প্রয়োজন।

প্রতিদিন, তোমার দেহ ৯০ মিলিয়ন, বিলিয়ন, বিলিয়ন ATP তৈরি ও রূপান্তর করে:

তোমার দেহের পুরো ওজন।

তোমার একদিনের জন্য একজন মানুষের সমপরিমাণ ATP প্রয়োজন।

এমনকি তোমার প্রয়োজনীয় কয়েক মিনিটের ATP ও সংরক্ষণ করা অসম্ভব।

ATP অনু দ্রুত শক্তি পরিবহনের জন্য ভীষণ কার্যকরী,

কিন্তু সংরক্ষণের জন্য অনুপযোগী,

যেহেতু এতে গ্লুকোজ অনুর ১% শক্তি এবং ৩ গুন ভর থাকে।

সুতরাং ATP অনবরত তৈরি হয় এবং দ্রুত শেষ হয়ে যায়।

এটি সেই অণুর সংক্ষিপ্ত সরল গল্প যা তোমাকে মৃত মহাবিশ্ব থেকে আলাদা রাখে,

এবং চলন্ত সিঁড়িতে স্লিংকি হতে সাহায্য করে।

গল্পটি অদ্ভূত।

বাঁচার জন্য সর্বদাই এই অনুর প্রয়োজন।

চলার জন্য তোমার এটা প্রয়োজন,

কারণ স্বল্প বিরতিও তোমার স্লিংকিকে থামিয়ে দিতে পারে।

তোমাকেই এটা তৈরি করতে হবে।

বিষয়টা ফুল স্পিডে গাড়ি চালানোর মত, একই সাথে ট্রাঙ্কে জ্বালানি তৈরি হচ্ছে,

রাস্তার পাশ থেকে সংগ্রহ করা আবর্জনা থেকে।

যতদূর জানি, সবকিছু শুরু হয়েছিল বহু বিলিয়ন বছর পূর্বে,

যখন মৃত মহাবিশ্বের ক্ষুদ্র অংশ একসঙ্গে এসে

এক মুহূর্তের জন্য অন্য কিছুতে পরিণত হয়েছিল।

এটা নিজেকে সচল রাখতে পারতো।

এটা বড় হতে পারতো।

সেই মুহূর্তে স্লিংকি’টা গতিশীল হয়, এবং তখন থেকে চলছেই।

সেই আদি কোষ থেকে তুমি হয়ে, এখন ভিডিয়োটি দেখছো।

এক সময়, তুমি পুনরায় মৃত মহাবিশ্বের সাথে মিশে যাবে।

হয়তো এটাকে তোমার দুঃসাহসিক অভিযানের গল্প বলবে।

হয়তো বলবে না।

কিন্তু সেটা খুঁজে পাওয়ার আগে,

তুমি তাই করবে যা জীবন সবচেয়ে ভালো পারে।

একটি মৃত মহাবিশ্বকে, অনেক বেশি আকর্ষণীয় করে তোলা।

(তোমার রুমে একটি অসাধারণ স্লিংকি পোস্টার দিয়ে।)

তুমি যদি এখন কোন কারণে বিষণ্ণ থাকো, এবং জীবনটাকে আকর্ষণীয় করতে চাও,

আমরা তোমার জন্যে কিছু নিয়ে এসেছি।

আমরা স্ক্রিলশেয়ারের সঙ্গে সহযোগী হয়েছি: একটি অনলাইন শিক্ষা সম্প্রদায়

যা সব ধরণের উদ্ভাবনী দক্ষতা অর্জনের হাজারো ক্লাস উপহার দিচ্ছে,

যেমন ইলাস্ট্রেশন, এনিমেশন, রান্না, সৃষ্টিশীল লেখা, কিংবা ছবি ও ভিডিয়ো।

শেখার মাধ্যমে নিজের জন্য কিছু তৈরি করাটা খুবই আনন্দের ও পরিপূরক বিষয়।

যদি তুমি এনিমেশন শিখতে চাও, আমরা কিছু স্ক্রিলশেয়ার ক্লাস তৈরি করেছি

যেখানে ব্যাখ্যা করেছি কীভাবে আমাদের ভিডিয়োতে দৃশ্যের এনিমেশন করি,

ভিডিয়ো ও হাতে-কলমে প্রজেক্টের মাধ্যমে।

তুমি মাসে $১০ এর কমে আনলিমিটেড এক্সেস পেতে পারো, বার্ষিক প্রিমিয়াম সদস্যপদ নিয়ে,

কুর্জগেসাগটের প্রথম ১,০০০ দর্শক ডেস্ক্রিপশনের লিংকে ক্লিক করে ২ মাসের ফ্রি ট্রায়াল পাবে।

তুমিও যদি আমাদের মতো ভেক্টর ইলাস্ট্রেশনে নতুন হয়ে থাকো,

আমরা Rick Berkelmans এর “Vector Illustration: Using Creative Constraints to Find Your Style” ভিডিয়োটি দেখতে বলবো।

তোমার দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য, একই সঙ্গে,

বিষন্নতার মাঝে থাকার বিরুদ্ধে লড়াই করো।

যদি তুমি নতুন দক্ষতা অর্জন এবং কুর্জগেসাগটকে সাহায্য করতে চাও, চেষ্টা করেই দেখো!

প্যাঁক

হাঁস: আমি কেন এই মহাবিশ্বে উদ্দেশ্য ছাড়াই ভেসে বেড়াচ্ছি? 🦆🤔