নীল তিমির কেন ক্যান্সার হয় না - পিটোর প্যারাডক্স | Kurzgesagt

🎁Amazon Prime 📖Kindle Unlimited 🎧Audible Plus 🎵Amazon Music Unlimited 🌿iHerb 💰Binance

ভিডিও

ট্রান্সক্রিপ্ট

ক্যান্সার এক ভয়ঙ্কর ও রহস্যজনক জিনিস।

ক্যান্সারকে বুঝতে গিয়ে,

তাকে ধ্বংস করায় পারদর্শী হতে গিয়ে,

আমরা আবিষ্কার করি একটি জীববৈজ্ঞানিক প্যারাডক্স যা আজও অমীমাংসিত রয়েছে।

বৃহত্তাকার প্রাণিরা কোন এক কারণে ক্যান্সারের হাত থেকে নিরাপদ,

যা জীববিজ্ঞান সম্পর্কে আমাদের সকল ধারণা উপেক্ষা করে।

একটি প্রানী যতো বড়, তার ততো বেশী ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা থাকার কথা-

– তার কারণ বুঝতে হলে আমাদের ক্যান্সারের রীতিনীতি সম্পর্কে আগে জানতে হবে।

(Kurzgesagt intro music)

Kurzgesagt: In a Nutshell

কোটি কোটি অংশের সম্মিলনে তৈরী প্রোটিনের রোবট আমাদের কোষ।

শুধুমাত্র রাসায়নিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে

এরা সৃষ্টি ও ধ্বংস করে নানা যন্ত্রপাতি,

অব্যাহত রাখে শক্তির উৎপাদন,

এবং তৈরী করে নিজেদের (প্রায়) নিখুঁত অনুলিপি।

আমরা এই জটিল বিক্রিয়াগুলোকে প্যাথওয়ে ডাকি।

তারা জৈবরাসায়নিক নেটওয়ার্কের উপর নেটওয়ার্ক, সব একে অপরের সঙ্গে অবিচ্ছেদ্যভাবে জড়িত।

তারা এতই জটিল যে একজন মানুষের পক্ষে তা বোঝা প্রায় অসম্ভব, অথচ তারা নিখুঁতভাবে কাজ করে চলে।

…তবে সবসময় তা হয় না।

হাজারো বিক্রিয়ার সম্মিলন কোটি কোটি বার এতো বছর ধরে হতে থাকলে

কোন না কোন ভুল হওয়া শুধুমাত্র সময়ের ব্যাপার।

এই ছোট ছোট ভুলগুলো যোগ হতে থাকে, এবং শেষমেশ সমগ্র সুবিশাল জীবযন্ত্রে ক্রুটি দেখা দেয়।

এই সমস্যা যেন হাতের বাইরে না চলে যায়

তার জন্য কোষগুলোর আত্মহত্যা করার ‘কিল-সুইচ’ রয়েছে।

তবে এই কিল-সুইচগুলোও অরুদ্ধ নয়।

তারা ব্যর্থ হলে একটি ক্রুটিযুক্ত কোষ ক্যান্সার সেলে পরিণত হতে পারে।

এদেরও বেশিরভাগ মৃত্যুবরণ করে রোগ প্রতিরোধকারী কোষদের হাতে।

তবে যথেষ্ট সময় পেলে

হাজারো কোষের মধ্যে কোন একটি ক্রুটিযুক্ত কোষ ধরা না পড়ে নিজের মতো আরও অসংখ্য কোষের জন্ম দিতেই পারে।

সব প্রাণীরই এই সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়।

সব প্রাণির কোষের আকার মোটামোটি সমান।

একটি ঈদুরের কোষ আপনার কোষের চেয়ে ছোট নয়, ঈদুরের আয়ু এবং কোষের সংখ্যা শুধু আরও কম।

অল্পসংখ্যক ও ক্ষীণস্থায়ী কোষ থাকায় এসব ক্ষুদ্র প্রাণির ক্যন্সার হওয়ার সম্ভাবনা কম হওয়ার আশা করাই স্বাভাবিক

– তবে বাস্তবে তা হয় না।

মানুষেরা ঈদুরের চেয়ে আরো ৫০গুণ বেশিদিন বাঁচে এবং তাদের শরীরে আছে ৩০০০ গুণ বেশিসংখ্যক কোষ,

অথচ মানুষ ও ঈদুরের ক্যন্সারের হার প্রায় সমান।

আরো অদ্ভুত বিষয় হচ্ছে যে মানুষের চেয়ে ৩০০০ গুণ বেশি কোষওয়ালা নীল তিমিদের জীবনে ক্যান্সারের দেখা মিলে না বললেই চলে।

এর নামই পিটো’স প্যারাডক্স –

এক অদ্ভুত উপলব্ধি যে বৃহত্তাকার প্রাণিদের প্রত্যাশিত পরিমাণের চেয়ে আরো অনেক কম ক্যান্সার হয়।

এর কারণ হিসেবে বিজ্ঞানীরা দুটি মূল তত্ত্ব পেশ করেছে – বিবর্তন ও হাইপারটিউমার।

সমাধান একঃ বিবর্তিত হও, নয়তো পরিণত হও ক্যান্সারের মণ্ডে।

৬০ কোটি বছর আগে বহুকোষী প্রাণির উদ্ভবের পর

প্রাণিরা ক্রমে আরও বড় হতে থাকে,

যার কারণে কোষের সংখ্যা এবং তার সঙ্গে ক্রটিযুক্ত কোষ তৈরির সম্ভাবনাও বাড়তে থাকে।

সুতরাং সব প্রাণির আরও উন্নত ক্যান্সার প্রতিরোধী ব্যবস্থা গঠন করতে হয়,

নয়তো তারা নিশ্চিহ্ন হয়ে পড়ে।

তবে ক্যান্সার চোখের পলকেই ঘটে যায় না।

এটি একটি প্রক্রিয়া যা একটি কোষের মধ্যে কিছু নির্দিষ্ট জিনে বহু পৃথক ভুল এবং মিউটেশনের কারণে ঘটে।

এই জিনগুলিকে প্রোটো-অনকোজিন বলা হয়, এবং তারা মিউটেট করলেই বিপদ।

যেমন কিছু নির্দিষ্ট মিউটেশনের কারণে একটি সেল আত্মহত্যার ক্ষমতা হারাবে।

অন্য এক মিউটেশনের কারণে কোষ লুকানোর ক্ষমতা অর্জন করবে।

আরেকটি, এবং সে সম্পদের জন্য ডাক পাঠাতে পারবে।

অন্য আরেকটির কারণে সে আরও দ্রুত বিস্তার লাভ করতে পারবে।

এই অঙ্কোজিনের একটি বিরোধী রয়েছে-

টিউমার সাপ্রেসর (দমনকারী) জিন।

তারা এই বিপদজনক মিউটেশনগুলো ঘটতে বাধা দেয় বা সেলটি মেরামতের বাইরে চলে গেলে আত্মহত্যার আদেশ দেয়।

গবেষণায় দেখা গিয়েছে বড় প্রাণিদের এই জিনগুলো আরও বেশি থাকে।

ফলে একটি হাতির কোষ টিউমারে পরিণত হতে হলে ঈদুরের চেয়ে আরও বেশি মিউটেশন হতে হবে।

হাতির ক্যান্সারের সম্ভাবনা তাই আরও ক্ষীণ।

এই সুবিধার সম্ভবত একটি মূল্যও আছে - তবে গবেষকরা এখনও তা চিহ্নিত করতে পারেনি।

হয়তো এর কারণে প্রাপ্তবয়স্ক হাতিরা আরও দ্রুত বুড়ো হয়, বা তাদের ক্ষত সারতে আরও সময় লাগে-

আমরা এখনও জানি না।

তবে এই প্যারাডক্সের সমাধান আসলে অন্যকিছুও হতে পারেঃ

“হাইপারটিউমার”

সমাধান ২ - হাইপারটিউমার

সমাধান ২ - হাইপারটিউমার (হ্যাঁ)

সমাধান ২ - হাইপারটিউমার (হ্যাঁ সত্যিই তাই)

হাইপারটুমারগুলির নামকরণ করা হয়েছে হাইপারপ্যারাসাইটস থেকে: পরজীবীর পরজীবী।

হাইপারটিউমার হচ্ছে টিউমারের টিউমার।

ক্যান্সারকে ভাবা যেতে পারে সহযোগিতার ভাঙ্গন হিসেবে।

সাধারণত কোষেরা অঙ্গ, টিস্যু বা ইমিউন সিস্টেমের উপাদানগুলির মতো কাঠামো তৈরি করতে একত্রে কাজ করে।

তবে ক্যান্সার কোষগুলি স্বার্থপর এবং কেবল তাদের স্বল্পমেয়াদী সুবিধার জন্য কাজ করে।

যদি তারা সফল হয় তবে তারা টিউমার তৈরি করে; মস্ত এই ক্যান্সার সংঘকে বধ করা অত্যন্ত কঠিন

তবে টিউমার তৈরি করতে লাগে কঠোর পরিশ্রম।

কয়েক মিলিয়ন বা বিলিয়ন ক্যান্সার কোষ দ্রুত সংখ্যাবৃদ্ধি করে, যার জন্য প্রচুর সংস্থান এবং শক্তি প্রয়োজন।

পুষ্টি চুরি করার পরিমাণের উপর নির্ভর করে তাদের বিকাশ।

তাই টিউমার সেলগুলো শরীরকে প্রতারিত করে টিউমারটিতে নতুন রক্তনালী সরবরাহ করতে।

আর এখানেই ক্যান্সার কোষের নিজস্ব চরিত্র হয়ে ওঠে তার পতনের মূল।

ক্যান্সার কোষগুলি সহজাতভাবে অস্থির থাকে এবং তাই তারা পরিবর্তন করা চালিয়ে যেতে পারে।

তাদের মধ্যে কেউ কেউ তাদের বন্ধুদের চেয়ে দ্রুত।

যদি তারা কিছুক্ষণের জন্য এটি করে,

এক পর্যায়ে মূল ক্যান্সার সেলটির একটি কপি

হঠাৎ নিজের স্বার্থ অনুযায়ী সহযোগিতা বন্ধ করে দিতে পারে।

অর্থাৎ দেহের বাকি কোষদের মতো

মূল টিউমারটিও হঠাৎ তার শত্রু হয়ে যায়,

যা একই দুর্লভ পুষ্টি এবং সংস্থানের জন্য লড়াই করছে।

সুতরাং নতুন রূপান্তরিত কোষগুলি একটি হাইপারটিউমার তৈরি করতে পারে।

সাহায্যের পরিবর্তে, তারা তাদের প্রাক্তন বন্ধুদের রক্ত সরবরাহ কেটে দেয়

অনাহারে মৃত্যুবরণ করে মূল ক্যান্সার কোষগুলো।

ক্যান্সারই বধ করছে ক্যান্সারকে।

এই প্রক্রিয়ার বার বার পুনরাবৃত্তি হতে পারে,

ফলে বড় জীবের শরীরে ক্যান্সার বিপদে পরিণত হওয়ার আগেই রূদ্ধ হয়

সম্ভবত বড় প্রাণিদের এরকম হাইপারটিউমার অনেকই আছে -

তারা খুব একটা বড় আকার ধারণ করে না দেখে আমরা লক্ষ্য করি না।

একটি ২গ্রাম টিউমার ঈদূরের ওজনের ১০%

কিন্তু একটি মানুষের ওজনের মাত্র ০.০০২%

এবং নীল তিমির বেলায় শুধুমাত্র 0.000002%

তিনটি টিউমারের একই সংখ্যক কোষ বিভাজন দরকার এবং একই সংখ্যক কোষ রয়েছে।

সুতরাং একটি নীল তিমির শরীর জুড়ে ক্ষুদ্র ক্যান্সার থাকতে পারে - তাতে তার যায় আসবে না

পেটোর প্যারাডক্সের অন্যান্য প্রস্তাবিত সমাধান রয়েছে,

যেমন বিভিন্ন বিপাকের হার

বা বিভিন্ন সেলুলার আর্কিটেকচার।

তবে আপাতত আমরা জানি না।

বিজ্ঞানীরা উত্তরের খোঁজে রয়েছেন ।

বড় প্রাণিরা কীভাবে এই মারাত্মক রোগ এড়িয়ে চলে তা বুঝতে পারলে

নতুন চিকিৎসার দুয়ার খুলে যেতে পারে।

ক্যান্সার আমাদের জন্য এক বিভ্রান্তিকর ধাঁধাঁ

আজ আমরা শেষ পর্যন্ত তাকে বুঝতে শুরু করছি

এবং তা করে হয়তো একদিন আমরা শেষ পর্যন্ত তাকে জয় করতে পারবো।

এই ভিডিওটি স্পনসর করেছে …

আপনি!

পাখি: কী???

আপনি যদি আমাদের আরও সাহায্য করতে চান তবে প্যাট্রিয়নে আমাদের সমর্থন করতে পারেন,

অথবা নিতে পারেন আমাদের তৈরি চমৎকার কোন পণ্য

যেমন আমাদের স্পেস এক্সপ্লোরার নোটবুক যার ইনফোগ্রাফিকস ও অনন্য চিত্রণ আপনার সৃজনশীলতা উদ্বুদ্ধ করবে

অথবা একটি ইনফোগ্রাফিক পোস্টার বান্ডিল,

অথবা এই Kurzgesagt হুডি,

বা যদি প্রথমবার মিস করে থাকেন,

আমাদের কৃতজ্ঞতা জার্নাল পুনঃসরবরাহ করা হয়েছে।

আমরা আমাদের পণ্য প্রচুর সময় ও ভালোবাসা দিয়ে তৈরি করি,

কারণ আমরা চাই বিশ্বে আমাদের অবদান সর্বদাই সকলের আনন্দের সূত্র হোক - ভিডিওর বেলায়ও এক

Kurzgesagt একটি প্রকল্প যা বাস্তবায়িত করা অসম্ভব হওয়ার কথা

এমন ভিডিও তৈরিতে লাগে দীর্ঘ কয়েক মাস, এবং এতখানি সময় ব্যয় করা সার্থক

শুধুমাত্র আপনাদের জন্য।

শুধুমাত্র কারণ আপনি দেখেন, অন্যদেরকে দেখান, এবং ভালোবাসেন।

দেখার জন্য ধন্যবাদ।

(Space-y Kurzgesagt theme)