ফার্মি প্যারাডক্স - সব এলিয়েন কোথায়? (1/2) | Kurzgesagt

🎁Amazon Prime 📖Kindle Unlimited 🎧Audible Plus 🎵Amazon Music Unlimited 🌿iHerb 💰Binance

ভিডিও

ট্রান্সক্রিপ্ট

কেবল আমরাই কি এ পুরো মহাবিশ্বের একমাত্র জীবিত কিছু?

দৃষ্টিগোচর মহাবিশ্বের ব্যাস ৯০০ কোটি আলোকবর্ষের মত।

এতে প্রায় ১,০০০ কোটি ছায়াপথ আছে, যার প্রতিটি ১ থেকে ১০ হাজার কোটি নক্ষত্রে পরিপুর্ণ।

সম্প্রতি আমরা জেনেছি যে, গ্রহগুলোর সংখ্যাও অনেকটা এমনই,

এবং সম্ভাব্য বহু বহু ট্রিলিয়ন

বাসযোগ্য গ্রহে পরিপূর্ন এ মহাবিশ্ব,

যার মানে, এসবের মাঝে প্রাণ থাকার ও উন্নত হবার

এক প্রবল সম্ভাবনা তো থেকেই যায়, তাই না?

কিন্তু এরা কোথায়?

মহাবিশ্বটা অনেক মহাকাশযানে ভরে যাওয়া কি উচিৎ নয়?

চলো এক ধাপ পেছনে ফিরে দেখা যাক।

এমনকি যদি অন্য ছায়াপথগুলোয় এলিয়েন সভ্যতাগুলো থেকেও থাকে,

সেকথা জানার আমাদের আর কোনোই উপায় নেই।

মূলত, আমাদের সরাসরি সম্পর্কিত ছায়াপথ অন্তর্বর্তি অঞ্চল যাকে Local Group বলা যায়—

এর বাইরের সবকিছুই চিরকালের জন্য আমাদের ধরাছোঁয়ার বাইরেই থেকে যাবে,

যার কারন জগৎ প্রসারিত হচ্ছে।

এমনকি যদি আমাদের নিকট বেশ দ্রুত মহাকাশযান থেকেও থাকে,

সহজ কথায় এরও বহু শত কোটি বছর লেগে যাবে ঐ সব স্থানে পৌঁছুতে,

বহুকাল লেগে যাবে মহাবিশ্বের একদম খালি অঞ্চলগুলি পেরোতে।

তাই বরং, আকাশ-গঙ্গাকেই ঘেঁটে দেখা যাক।

আকাশ-গঙ্গা, এ হল আমাদের ছায়াপথ।

এতে আছে ৪০ হাজার কোটি নক্ষত্র।

এতো অনেক নক্ষত্র—অন্যভাবে বললে পৃথিবীর প্রতিটা বালুকণার জন্য ১০,০০০ টা করে নক্ষত্র।

প্রায় ২ হাজার কোটির মত সূর্য-সদৃশ নক্ষত্র এ আকাশ-গঙ্গাতেই আছে।

হিসেব বলে যে, এর ৫ ভাগের

বাসযোগ্য বলয়ে পৃথিবীর আকারের গ্রহ রয়েছে।

যে বলয়-পরিসীমাতে এমন উপযোগী পরিবেশ বিদ্যমান যেন প্রাণ থাকতে পারে।

যদি এগুলোর মাত্র ০.১% এর মধ্যে প্রাণ থেকে থাকে,

তবে আকাশ-গঙ্গায় ১০,০০,০০০ গ্রহ পাওয়া যাবে যেসবে প্রাণ আছে।

কিন্তু দাঁড়াও, আরও কথা আছে!

এ আকাশ-গঙ্গা প্রায় ১৩’শ কোটি বছরের পুরনো।

শুরুতে, এতে প্রাণ ধারণের উপযোগী স্থান থাকতে পারে না,

কারন সবকিছু বেশ দারুণভাবেই বিস্ফোরিত হচ্ছিল।

কিন্তু তার এক থেকে দু ‘শ কোটি বছর পর, প্রথম বাস-উপযোগী গ্রহসকলের জন্ম হতে থাকে।

পৃথিবী কেবল ৪’শ কোটি বছরের পুরনো।

সুতরাং অন্য গ্রহগুলোয় অতীতে আরও আগেই প্রাণ বিকশিত ও

উন্নত হবার ট্রিলিয়ন সম্ভাবনা তো রয়েছেই।

যদি এদের মাত্র একটিও মহাকাশ-ভ্রমণ করার মত অতি উন্নত সভ্যতায় পরিণত হোতো,

তাহলে এতদিনে আমরা তার হদিস পেতাম।

অমন এক সভ্যতা আসলে কেমন সভ্যতা?

এর তিনটে শ্রেণী আছে।

শ্রেণী ১ সভ্যতা এর পুরো গ্রহের

সকল শক্তিকে কাজে লাগাতে পারবে।

তোমাদের কৌতূহল নিবারণের জন্য বলি, এখন আমরা সে তুলনায় স্কেলএর ০.৭৩ পর্যায়ে আছি।

এবং আগামী কয়েক শ বছরে আমাদের শ্রেণী ১ এ উন্নীত হওয়া উচিৎ।

শ্রেণী ২ সভ্যতা তাদের নক্ষত্রের সকল শক্তিকে

কাজে লাগাতে সক্ষম।

এবার কিছু অভাবনীয় কল্পবিজ্ঞানের সাহায্য লাগবে, তবে নিয়মানুযায়ী এসব করা সম্ভব—

এ হল ডাইসন পরিমন্ডলএর মত ধারণা, এ এক অতিকায় দুরূহ-জটিল জিনিস যা সূর্যকে ঘিরে থাকবে,

এমনটাই ধারণা করা যায়।

শ্রেণী ৩ হল এক সভ্যতা যা আসলে নিয়ন্ত্রণ করবে

এর পুরো ছায়াপথ ও তার শক্তিকে।

এমন উন্নত এক এলিয়েন সম্প্রদায় আমাদের নিকট ঈশ্বর সমতূল্যই বটে।

কিন্তু প্রথমেই কেন এমন এলিয়েন সভ্যতার সাক্ষাৎ পাবার জন্য আমাদের সক্ষম হতে হবে ?

যদি প্রজন্মান্তরে আমরা এমন এক নভোযান বানাতাম যা ১০০০ বছর ধরে

আমাদের জীবিত বয়ে নিয়ে যেতে সক্ষম, তাহলে আমরা ২০ লক্ষ বছরেই পুরো ছায়াপথে উপনিবেশ স্থাপন করতে পারতাম।

মনে হচ্ছে সময়টা বেশ দীর্ঘ, তবে মাথায় রেখো, এ আকাশ-গঙ্গাও কিন্তু বিশাল।

সুতরাং পুরো ছায়াপথে নিবাস নিতে যদি ২০ লক্ষ বছর বা এর অধিক সময় লেগে যায়,

আর শত কোটি না হোক, অন্তত ১০ লক্ষ এমন গ্রহ

আকাশ-গঙ্গাতেই রয়েছে যেখানে প্রাণ আছে, এবং

এই অন্যসব জীবন নিশ্চই আমরা যে সময় পেয়েছি তার চাইতেও

বিপুল সময় পেয়ে থাকবে,

তারপর… ঐসব এলিয়েন- ওরা কোথায়?

এই হল ফার্মি প্যারাডক্স, আর কারও কাছে এর কোন উত্তর নেই।

তবে আমাদের কিছু ধারণা আছে।

এবার চলো ফিল্টার নিয়ে কিছু বলা যাক।

এ প্রসঙ্গে, ফিল্টার এক প্রতিবন্ধকের ইঙ্গিত দেয়

যা জীবনের পক্ষে পেরিয়ে আসা বেশ শক্ত।

তাদেরকে নানান সর্বনাশা ধাপের পরিস্থিতি উতরে আসতে হয়।

একঃ আছে কিছু গ্রেট্‌ ফিল্টার, এবং আমরা ওসব পেরিয়ে এসেছি।

জটিল জীবন উন্নতির ক্ষেত্রে এ এক কঠিনতর পরীক্ষা।

প্রাণ উদ্ভবের পেছনে থাকা প্রক্রিয়াকে এখনো ঠিকভাবে বোঝাই যাচ্ছে না,

আর এর দরকারি শর্তাবলী জটিলতর হতেই পারে।

অতীতে হয়তো মহাবিশ্ব আরো প্রতিকূল ছিলো।

আর কেবল সম্প্রতি সব ঠান্ডা হয়ে এটি জটিল প্রাণ বিকশিত হবার জন্য অনুকূল হয়ে উঠেছে।

এ দিয়ে আরও বোঝায় যে, হয়তো আমরাই এক ও অনন্য, কিংবা অন্তত,

একেবারে প্রথম না হলেও, এ পুরো মহাবিশ্বের

মধ্যে প্রথম দিকের সভ্যতা হলাম আমরা।

দুইঃ কিছু গ্রেট ফিল্টার আছে যা আমাদের সামনেই রয়েছে।

এ একেবারে সত্যসত্যই খারাপ খবর।

হয়তো আমাদের পর্যায়ের জীবনের লীলা খেলা জগতের সবখানেই বিদ্যমান,

তবে উন্নতির এক নির্দিষ্ট বিন্দুতে পৌঁছেই তারা ধ্বংস হয়ে যায়,

এ এমন এক বিন্দু যার রেখা আমাদের সম্মুখেও আঁকা আছে।

উদাহরণস্বরূপ, ভবিষ্যতের অভাবনীয় প্রযুক্তি থাকার পর

যখন তা সক্রিয় হয়ে উঠলো, অমনি গ্রহটা গেল ধ্বংস হয়ে।

প্রত্যেক উন্নত সভ্যতার শেষ কথা হতে পারে,

“এই নতুন যন্ত্র আমাদের সকল সমস্যা দূর করবে, এবার আমি এর বোতামে চাপ দিলাম!”

এসব যদি সত্য হয়, তবে মানব ইতিহাসের শুরুর সময়ের চাইতেও আমরা এর সমাপ্তির আরও কাছে চলে এসেছি।

অথবা, প্রাচীন সেই তৃতীয় শ্রেণীর সভ্যতা হয়তো জগতকে পর্যবেক্ষণ করে চলেছে

আর, যখনই এক সভ্যতা যথেষ্ট উন্নত হয়ে ওঠে, ওরা এদেরকে জগৎ থেকে মুছে দেয়।

একেবারে সাথে সাথেই।

হয়তো কিছু না কিছু তো রয়েছেই, যাকে আবিষ্কার না করাই বোধয় ভালো।

আমাদের পক্ষে যা জানার কোনোই উপায় নেই।

পরিশেষে একটা ব্যাপারঃ হয়তো আমরা একা।

এই মুহুর্তে, আমাদের কোনো প্রমাণ নেই যে আমাদের ছাড়া আর কোনো প্রাণ-চাঞ্চল্য আছে।

কিছুই নেই।

জগৎ কেবলই ফাঁকা আর নিষ্প্রাণ হয়ে প্রকাশিত হয়ে চলেছে।

কেউই আমাদেরকে বার্তা পাঠাচ্ছে না, কেউই আমাদের ডাকে সাড়া দিচ্ছে না।

হতে পারে আমারা একেবারেই একা,

আর অনন্ত মহাবিশ্বের এক ক্ষুদ্র আর্দ্র কাদার গোলোকেই বন্দী হয়ে আছি।

এমনটা ভেবে কি তুমি ভয় পেয়ে গেলে?

যদি পেয়ে থাকো, তবে তোমার এমন আবেগ একদম যথাযথ।

যদি আমরা এ গ্রহের প্রাণ-বৈচিত্রকে শেষ হয়ে যেতে দিই,

বোধয় জগতে আর কোনো প্রাণ অবশিষ্ট রইবে না,

জীবন খতম হয়ে যাবে, হয়তো চিরকালের জন্য।

এই যদি হয় পরিস্থিতি তাহলে, আমাদেরকে নক্ষত্র থেকে নক্ষত্র ভ্রমণ করে যেতে হবে

আর তৃতীয় শ্রেণীর প্রথম এক সভ্যতায় উন্নিত হতে হবে যেন আমরা

প্রাণের অস্তিত্বের শিখাটি রেখে যেতে পারি

এবং মহাজগতের অন্তিম নিঃশ্বাসের আগ্‌ পর্যন্ত তা যেন ছড়িয়ে যেতে পারি

সবকিছু বিস্মৃতির অতল গহ্বরে হারিয়ে যাবার আগেই।

এ মহাবিশ্ব কোনো একজনের পক্ষে চষে বেড়াবার জন্য খুব বেশি সুন্দর, তা কিন্তু নয়।

This video was made possible by your support.

It takes at least 200 hours to make one of our videos,

and thanks to your contributions on Patreon,

we are slowly able to do more and more of them.

If you want to help us out,

and get your own personal bird, for example,

check out the Patreon page!

Subtitles by the Amara.org community