ফার্মি অসম্ভবতা II - সমাধান এবং ধারণা - সব বিদেশী কোথায়? | Kurzgesagt

🎁Amazon Prime 📖Kindle Unlimited 🎧Audible Plus 🎵Amazon Music Unlimited 🌿iHerb 💰Binance

ভিডিও

ট্রান্সক্রিপ্ট

পৃথিবীর প্রতিটি বালুকণার জন্য সম্ভবত ১০,০০০ টা করে নক্ষত্র এই দৃষ্টিগোচর মহাবিশ্বেই ছড়িয়ে আছে।

আমরা জানি যে ট্রিলিয়ন ট্রিলিয়ন গ্রহ আছে।

তাই এলিয়েনরা সব কোথায়?

এই হল ফার্মির প্যারাডক্স

এ নিয়ে আরও জানতে চাইলে তুমি প্রথম খন্ড দেখে নাও।

এখানে আমরা ফার্মির প্যারাডক্সের সম্ভাব্য সমাধানের খোঁজ চালাব।

তো আমরা কি ধ্বংস হতে চলেছি নাকি পরম সৌভাগ্য আমাদের জন্য অপেক্ষায় আছে?

মহাকাশ যাত্রা শক্ত কাজ। যদিও বা সম্ভবপর হয়, তারপরও অন্য নক্ষত্রে যাত্রা করা এক মস্ত চ্যালেঞ্জের ব্যাপার বৈকি।

বিপুল পরিমাণ পণ্য-রসদ-সামগ্রীকে কক্ষপথের যানটিতে ঠেলে নিয়ে গিয়ে জড়ো করতে হবে।

সহস্র কালের ভ্রমণে দরকার এমন বংশবিস্তার যেন তা পুনরায় শুরু করার জন্য যথেষ্ট হয়।

আর গ্রহটাকে দূর থেকে যতোটা ভালো মনে হচ্ছিল অতোটা যুৎসই নাও হতে পারে।

যাত্রায় টিকে থেকে যানটিকে যারা নামানোর চেষ্টা করেছিল তাদের জন্য ইতোমধ্যেই তা অত্যন্ত দুরূহ-সাধ্য ব্যাপার ছিলো।

আর বহির্জাগতিক গ্রহের আক্রমণ ঠেকানো হয়তো অসম্ভব হয়ে উঠতে পারে।

সেই সাথে সময়কেও বিবেচনা করে দেখো, মহাবিশ্ব অত্যন্ত পুরাতন।

পৃথিবীতে অন্তত ৩শ ৬০কোটি বছর ধরে প্রাণ আছে।

যেখানে বুদ্ধিমান মানুষের বাস প্রায় ২,৫০,০০০ বছর ধরে।

কিন্তু কেবল মোটামুটি ১ শতকেই আমরা অসামান্য দূরত্ব পেরিয়ে যোগাযোগ স্থাপনের প্রযুক্তি হাতে পেয়েছি।

অভিজাত এলিয়েন সাম্রাজ্য থাকতেই পারে যা হাজারো ধরণকে রপ্ত করেছে আর লক্ষ লক্ষ বছর ধরে টিকে রয়েছে,

এবং আমরা হয়তো তাদের চিহ্নকে ধরতে পারছি না।

দূরের জগতে হয়তো প্রকাণ্ড সব ধ্বংসের স্মৃতিচিহ্নের ঢেউ খেলে যাচ্ছে।

পৃথিবীর জীব-বৈচিত্রের ৯৯% মরে শেষ হয়েছে।

এটা সহজেই প্রতিপন্ন করা যায় যে, এমনটাই আমাদের ভাগ্যে আছে তা সে এখন-তখন যখুনিই হোক।

বুদ্ধিমান প্রাণী হয়তো উন্নত হয়ে ছড়িয়ে যেতে পারে নানান মণ্ডলীতে আর বারংবার মরেও যেতে পারে।

তবে ছায়াপথ চষে বেড়ানো সভ্যতাগুলোর হয়তো এমনটা হয় নি।

সুতরাং হয়তো এ হল জগতে জীবনের ঐক্যবদ্ধ পারদর্শিতা যা থেকে নক্ষত্রের পানে চেয়ে বিস্ময়ের সেই প্রশ্নের কিনারা পাওয়া যে “আর সকলে কোথায়?”

তবে এলিয়েনদের আমাদের মত মনে করার কোনোই কারণ নেই

কিংবা আমাদের যুক্তি তাদের ক্ষেত্রে খাটবে তাও নয়।

হয়তো আমাদের যোগাযোগ-প্রযুক্তি কেবল আদিম আর সেকেলে বলেই এমন হচ্ছে।

ভেবে দেখো, মোর্স-সংকেত-প্রেরকযন্ত্র দিয়ে একটা ঘরে বসে তুমি বার্তা প্রেরণ করে যাচ্ছো অথচ কেউ সারা দিচ্ছে না

আর তুমি নিজেকে একা ভাবছো, হয়তো আমরা বুদ্ধিমান প্রাণীদের পক্ষে এখনও সনাক্তকরণের অযোগ্য

আর আমরা এমনটাই রয়ে যাবো যতোক্ষণ না পর্যন্ত আমরা সঠিকভাবে যোগাযোগ করাকে রপ্ত করবো।

এবং এমনকি এলিয়েনদের সাথে যদি আমাদের সাক্ষাৎ হতো, তবে হয়তো আমরা এতোটাই ভিন্ন হতাম যে তাদের সাথে অর্থপূর্ণ যোগাযোগ করতে পারতাম না।

চেষ্টা করে তোমার কল্পনায় সবথেকে বুদ্ধিমান কাঠবেড়ালটির কথা ভাবো,

তুমি যতো কঠিন চেষ্টেই করো না কেন কিছুই আসে যায় না, তুমি আমাদের সমাজ নিয়ে ওকে বোঝাতেই পারবে না।

সর্বোপরি কাঠবেড়ালের দিক থেকে একটা গাছ হল ওর বেঁচে থাকবার জন্য ওর মত পরিশীলিত বুদ্ধিমান কিছু একটা।

তাই সে জানে বন-জঙ্গল কেটে ফেলা পাগলামি তবে বন কেটে ফেলার মানে এই নয় যে, আমরা কাঠবেড়ালকে ঘৃণা করি।

আমরা শুধু সম্পদ চাই

কাঠবেড়ালের প্রার্থনা আর তার টিকে থাকার ব্যাপার আমাদের কাছে উদ্বেগের কিছুই নয়।

তৃতীয় শ্রেণীর সভ্যতার এমন সম্পদের দরকার হতে পারে যাতে করে তেমন ভাবেই তারা আমাদের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে।

তারা হয়তো তাদের প্রয়োজনকে সহজসাধ্য করতে আমাদের মহাসাগরকে অমনি বাষ্পীভূত করে ফেলল।

কোনো এলিয়েন ক্ষণিকের জন্য ভাবলো “ওওহ্‌ এরা কতো ছোট, এরা কত্তো সুন্দর সব কংক্রিটের কাঠামো বানিয়েছে, আচ্ছা ভালো, তা এবার এরা মরে গেলো।”

এসব হচ্ছে তাদের টেনে নেবার গতি চালু হবার আগে।

কিন্তু যদি এমন সভ্যতা থেকে থাকে যারা অন্য প্রাণীদের মুছে দিতে চায়,

তাহলে তা তাদের প্রাচুর্য্য বৃদ্ধির সাথে যতোটা সম্পর্কিত হবে তার চাইতেও বেশি উদ্দীপ্ত হবে ওদের সভ্যতার ধরণ দ্বারা।

সে যাই হোক তারা যথাযথ অস্ত্রসজ্জিত হয়ে এ প্রক্রিয়াকে স্বয়ংক্রিয় করতে আরও কার্যকারী হয়ে উঠবে।

তারা ক্ষুদ্রাকায় ন্যানো-মেশিনের থেকে এক ধরণের স্বয়ংক্রিয়-প্রতিরূপ নির্মাণকারী মহাকাশ-যান তৈরি করে ফেলবে।

তারা চালনা করবে একেবারে আণবিক পর্যায়ে যা অবিশ্বাস্যরকম দ্রুত আর সাংঘাতিক,

যে শক্তির বলে আক্রমণ করে যেকোন কিছুকে তাৎক্ষণিক ছিন্নভিন্ন করে ফেলা যাবে।

এ এমনই যে তোমায় কেবল চার ধরণের নির্দেশ দিতে হবে।

এক, প্রাণ আছে এমন গ্রহ খুঁজে বার করো।

দুই, ঐ গ্রহের সবকিছুকে ছিন্নভিন্ন করে তাদেরকে প্রাথমিক উপাদানের অংশে ভাগ করে ফেলো।

তিন, উপাদানগুলোকে নতুন মহাকাশ-যান বানাতে ব্যবহার করো।

চার, তা পুনরায় করো।

এমন সর্বগ্রাসী-মারণ-যন্ত্র কয়েক লক্ষ বছরে পুরো একটা ছায়াপথ চষে বেড়িয়ে একে নির্জীব করে ফেলতে পারে,

কিন্তু কাঁচামালের জন্য কিংবা গণহত্যায় নিজেকে যুক্ত করে কেন তুমি আলোকবর্ষের পর আলোকবর্ষ ধরে উড়ে যাবে।

আলোর গতি আসলে যথেষ্ট দ্রুত নয়।

যদি কেউ আলোর গতিতে ছুটতে পারে, তাহলে আকাশ-গঙ্গা ছায়াপথ একবার অতিক্রম করতে তার ১০,০০০ বছর সময় লাগবে

আর তোমার গতি হয়তো আরও ধীর।

হয়তো এমন কোন উপায় আছে যা সভ্যতার হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠার চাইতে বেশি গ্রহনযোগ্য হবে।

এক অত্যাশ্চর্য ধারণা হল ম্যাট্রিঔস্কা ব্রেইন।

নক্ষত্রকে ঘিরে থাকা এক অতিকায় জিনিস,

এক কম্পিউটার যার গণনার ক্ষমতা এমনই যে, একটা পুরো প্রজাতি গুষ্টিসুদ্ধ তাদের চেতনাকে ওতে আপলোড করে রাখতে পারবে আর টিকে রইবে এক কৃত্রিম মহাজগতে।

আর সম্ভবতই, যে কেউ অন্তহীন পরমানন্দের ধারা উপভোগ করতে পারবে, কখনোই জন্মাতে বা দুঃখ পেতে হবে না, একেবারে যথাযথ জীবন।

যদি লাল বামনকে ঘিরে গড়ে তোলা হয়, তবে এই কম্পিউটার ১০ ট্রিলিয়ন বছর অব্দি চলৎশক্তি পেতে থাকবে।

যদি এমনটাই হয় তবে, কে আর চাইবে অন্য ছায়াপথ জয় করতে কিংবা অন্য জীব-জগতের সাথে কথা কইতে।

ফার্মির প্যারাডক্সের এই সকল সমাধানের মধ্যে একটা ঘাপলা আছে।

আমরা জানি না, প্রযুক্তি শেষ সীমায় কোথায় গিয়ে ঠেকবে।

আমরা হয়তো সীমানার কাছাকাছি যেতে পারবো কিংবা প্রায় কাছেও পৌঁছুতে পারবো না।

আর এমন মহাশক্তিধর প্রযুক্তি আমাদের অপেক্ষায় রত, যা

আমাদের অমর করবে, ছায়াপথের দূরদূরান্তে নিয়ে গিয়ে ঈশ্বর সমতূল্য পর্যায়ে উন্নীত করে তুলবে।

একটা কথা আমাদের স্বীকার করতে হবে যে, আমরা কিছুই জানি না।

মানবকুল শিকারী-সংগ্রাহকদের সময় থেকে এখন অব্দি তাদের অস্তিত্বের নব্বই শতাংশেরও বেশি সময় ব্যয় করেছে।

৫০০ বছর আগে আমরা ভাবতাম, কেবল আমরাই মহাবিশ্বের কেন্দ্র।

২০০ বছর আগে আমরা শক্তির প্রধান উৎস্য হিসেবে মনুষ্য-শ্রমনির্ভরতাকে কাটিয়ে উঠেছিলাম।

৩০ বছর আগে আমাদের হাতে এসেছে সর্বগ্রাসী অস্ত্র যা রাজনৈতিক মতানৈক্যতার দরুন একে অন্যের দিকে তাক করা ছিলো।

বিশ্বজগতের সময়ের মাপকাঠিতে আমাদের এ কেবল শৈশব কাল,

আমরা অনেকটা পথ পেরিয়ে এসেছি কিন্তু এখনও বহুদূর চলার বাকি।

নিজেদেরকে মহাবিশ্বের কেন্দ্র ভাবার মানসিকতা এখনও মানুষের মধ্যে দেখা যায়,

তাই মহাবিশ্বের জীবন নিয়ে হিংসাত্মক ধারণাগুলো তৈরি হওয়াটা সহজ বটে।

কিন্তু পরিশেষে, সঠিক জিনিস খোঁজার কেবল একটাই পথ আছে, তাই না?

Subtitles by the Amara.org community