এন্টিবায়োটিক আপোকালিপ্স ব্যাখ্যা করা হয়েছে। | Kurzgesagt

🎁Amazon Prime 📖Kindle Unlimited 🎧Audible Plus 🎵Amazon Music Unlimited 🌿iHerb 💰Binance

ভিডিও

ট্রান্সক্রিপ্ট

আপনার মন্তব্য কি হবে যদি আমরা আপনাকে বলি যে, মানবজাতি এই মুহূর্তে

সমন্বিতভাবে এমন এক জীবাণু গঠনে অবদান রাখছে যা জিনগতভাবে নিখুত ও চরম শক্তিশালী?

এমন জীবানু যা শত মিলিয়ন লোক কে মেরে ফেলতে পারে!

আসলে, এটা এই মুহূর্তেও ঘটছে।

আমরা এই পরাক্রমশালী ব্যাকটেরিয়াকে প্রতিনিয়ত তৈরি করে যাচ্ছি!

ব্যাক্টেরিয়া হল আমাদের এই গ্রহের সবচেয়ে পুরনো জীব।

সবচেয়ে ছোট এই জীব যা টিকে থাকার ক্ষেত্রে সবচেয়ে দক্ষ

এবং সর্বত্র যার বিচরন।

বেশিরভাগ ব্যাক্টেরিয়া-ই অক্ষতিকর।

আপনার দেহ শত হাজার কোটি ব্যাক্টেরিয়া ধারন করে এবং যা আপনাকে বাঁচতেও সহায়তা করে।

কিন্তু অন্যগুলো আপনার দেহ কে আক্রমন করতে পারে, দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে সেখানে থেকে এবং আপনাকে মেরেও ফেলতে পারে।

লক্ষাধিক মানুষ মারা যায় শুধুমাত্র এই ব্যাক্টেরিয়ার আক্রমনে/ইনফেকশনে,

যতদিন না আমরা মহাক্ষমতাধর এন্টিবায়োটিক অস্ত্র তৈরি করতে পারি।

ভ্যাক্সিন কে নিয়ে এন্টিবায়োটিক ঔষধি জগতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনেছে

এবং বাচিয়েছে লক্ষ লক্ষ জীবন।

এন্টিবায়োটিক শুরুতেই খুব দ্রুত বেশীরভাগ সামর্থ ব্যাক্টেরিয়াকে ধ্বংস করে ফেলে,

বাকি রয়ে যায় অল্প কিছু টিকে যাওয়া ব্যাক্টেরিয়া

যেগুলার সাথে আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধক ব্যবস্থা সহজেই লড়াই করতে পারে।

এন্টিবায়োটিক কিভাবে কাজ করে?

ব্যাক্টেরিয়াকে একটি জটিল যান্ত্রিক ব্যবস্থার সাথে তুলনা করা যেতে পারে,

যার মধ্যে হাজার হাজার জটিল প্রনালী/প্রক্রিয়া চলতে থাকে যা একে জীবিত ও ক্রিয়াশীল রাখে।

এন্টিবায়োটিক এই জটিল যান্ত্রিক কৌশলকে ব্যহত করে।

যেমন উদাহরন, ব্যাক্টেরিয়ার বিপাক ক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করে,

যা তাদের বংশবৃদ্ধি ও বিকাশ কে গুরুভাবে হ্রাস করে, তাই তারা কম বিপদজনক থাকে।

অন্যান্য এন্টিবায়োটিক জীবানুর জিনে আক্রমন করে এবং জিনের অনুলিপি তৈরিতে বাধা দেয়,

যার ফলে ব্যাক্টেরিয়ার গুনোত্তর বৃদ্ধি রোধ করে, সর্বোপরি মেরে ফেলে।

অথবা কেবল ব্যাক্টেরিয়ার বাইরের স্তর কে ছিড়ে টুকরো টুকরো করে ফেলে,

তার ফলে, তাদের ভিতরের সবকিছু ছিন্নভিন্ন হয়ে যায় এবং দ্রুত মরে যায়।

এসব কিছুই ঘটে আমাদের শরীরের কোষকে কোনভাবে ক্ষতিগ্রস্থ না করে।

কিন্তু জীবানুর বিবর্তন এই বেপারগুলোকে আরো কঠিনতর করে ফেলছে।

অসংখ্য জিনগত পরিবর্তনের দৈবক্রমে, যেসব ব্যাক্টেরিয়া আপনাকে আক্রমন করেছে তার কিছু সংখ্যক

বিবর্তিত হয়ে যেতে পারে, যারা নিজেদেরকে এন্টিবায়োটিক এর বিরুদ্ধে টিকিয়ে রাখতে পারে।

যেমন, এন্টিবায়োটিক কে বিশ্লেষণ করে

এবং তার আণবিক গঠন পরিবর্তন করে ফেলতে পারে, যেন তা ঐ জীবানুকে ক্ষতিগ্রস্থ করতে না পারে।

অথবা, তাদের নিজেদের শক্তি নিয়োজিত করে এমন এক রাসায়নিক পাম্প চালায় যা এন্টিবায়োটিক কে মানব শরীর থেকে বের করে দেয়

জীবানুকে আক্রমন করার আগেই।

এই অল্প কিছু প্রতিরোধকারী ব্যাক্টেরিয়া তেমন কোন বড় ব্যাপার না

আমাদের শরীরের প্রতিরোধ ব্যবস্থার কাছে।

কিন্তু যদি তারা কোনভাবে আমাদের শরীর থেকে সক্রিয় অবস্থায় বের হয়ে যেতে পারে, তবে তারা পুরো জীবানুজগত কে প্রতিরোধী করে তুলতে পারে।

কিভাবে ব্যাক্টেরিয়া নিজেদের মাঝে এন্টিবায়োটিক বিরুদ্ধ প্রতিরোধ ব্যবস্থা ছড়িয়ে দিতে পারে?

প্রথমত, ব্যাক্টেরিয়ার দুই ধরনের ডিএনএ আছে।

ক্রোমোজম এবং মুক্ত ভাসমান প্লাসমিড।

তারা নিজেরা একে অপরকে আলিঙ্গন করে এবং এই প্লাজমিড আদান প্রদান করে।

যেন তারা উপযোগী, উপকারী ক্ষমতা আদান প্রদান করতে পারে নিজেদের মধ্যে।

এভাবে, জীবানুরা নিজেদের প্রতিরোধ ক্ষমতা সহজেই পুরো বসতিতে ছড়িয়ে দিতে পারে।

অথবা, রুপান্তর প্রক্রিয়ায় তারা মৃত ব্যাক্টেরিয়া র শরীরের ভিতর থেকে অনেক কিছু সংগ্রহ করতে পারে

এবং ডিএনএ সংগ্রহ করে।

ভিন্ন জাতের ব্যাক্টেরিয়ার মধ্যেও এটি ঘটতে পারে।

এবং এভাবে, গড়ে উঠবে মহাপরাক্রমশালী জীবাণু, ব্যাক্টেরিয়া- যা অনেক ধরনের এন্টিবায়োটিক এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধী হবে।

বিভিন্ন ধরনের মহাজীবাণু ইতিমধ্যে বর্তমান এই পৃথিবীতে।

বিশেষত, হাসাপাতালগুলো জীবাণু বংশবৃদ্ধি ও বিবর্তন এর জন্য সবচেয়ে উপযোগী।

মানবজাতি খুব সহজেই ভূলে যেতে পারে।

এন্টিবায়োটিক আবিস্কারপূর্ব সময়ে ভয়ঙ্কর যুগটি ভূলে গেছি আমরা।

বর্তমানে, এই শক্তিশালী ঔষধগুলোকে আমরা নিত্যভোগ্য পণ্য বানিয়ে ফেলেছি

অথচ, বিজ্ঞান এর এই প্রযুক্তিটা ছিল যুগান্তকারী।

এভাবে একটি বিশাল বৈষম্য তৈরি হচ্ছে…

শত মিলিয়ন মানুষ এখনো

এন্টিবায়োটিক পায়নি, উন্নয়নশীল দেশগুলোতে,

অথচ বিশ্বের অনেক দেশে এন্টিবায়োটিক কে অবমুক্তভাবে ব্যবহারে নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে

এবং নির্দেশনা ছাড়াই ও সতর্কাতীত ভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে।

এন্টিবায়োটিক হওয়া উচিত সর্বশেষ আশ্রয়।

এমনটা নয় যে, আপনার ঠান্ডা লাগাটা বিরক্তিকর লাগছে তাই আপনি এন্টিবায়োটিক নিবেন।

আরো একটি বড় সমস্যা হল, মাংস প্রস্তুতিতে এন্টিবায়োটিকের ব্যবহার।

কোন মুহূর্তে, মানুষ এর পোষা

২০-৩০ শত কোটি গবাদি পশু থাকে।

মাংস কে স্বল্পমূল্য রাখার জন্য, অনেক পশু ভয়ঙ্কর পরিবেশে রাখা হয়,

খুব-ই অল্প জায়গার মধ্যে এবং অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে,

যা রোগজীবাণু ছড়ানো ও বংশবৃদ্ধির জন্য খুব-ই সহযোগী।

অসংখ্য পশুকে এন্টিবায়োটিক দেয়া হয় যেন যত বেশী সম্ভব জীবাণুমুক্ত রাখা যায়

এবং যেন অসুস্থ হয়ে মারা না যায়।

কেননা, চীজবার্গার এর দাম এক ডলার রাখতে হবে।

আশাতীত নয় যে, এর ফলে

আমরা আরো বেশী বেশী ব্যাক্টেরিয়া তৈরি করছি

যা এন্টিবায়োটিক প্রতিরোধী।

এটার বিপরীতে আমাদেরকে আরো শক্তিশালী এন্টিবায়োটিক ব্যবহার করতে হচ্ছে।

এবং আমাদের আরেকটা শক্তিশালী অস্ত্র হচ্ছেঃ একেকটা বিশেষ ধরনের এন্টিবায়োটিক

যেগুলা দিয়ে প্রতিরোধী ব্যাক্টেরিয়াকে নির্মূল করা সম্ভব।

সেগুলোর ব্যবহার কঠিনভাবে নিয়ন্ত্রিত, যেন মহাব্যাক্টেরিয়া তৈরি না হয়।

অথবা আমরা তেমনটা ভাবছি।

২০১৫ সালে, একটি ভয়ংকর খবর এসেছে চায়না থেকে।

সর্বশেষ বিকল্প/উপায়ন্তর ‘কলিস্টিন’ এন্টিবায়োটিক এর প্রতিরোধী ব্যাক্টেরিয়া

খুঁজে পাওয়া গেছে।

কলিস্টিন একটি পুরনো ঔষধ, যা খুব ই কম ব্যবহার হয় কারন এটি যকৃত/লিভার এর ক্ষতি করে

তাই এর বিরুদ্ধে ব্যাক্টেরিয়ার প্রতিরোধ খুব কম ছিল, যার ফলে

একটি বিশেষ জটিল ইনফেকশন যা হাসপাতালে দেখা যায়, তার প্রতিষেধক হিসেবে এই এন্টিবায়োটিক টা ছিল সর্বশেষ উপায়

যা দিয়ে এমন কিছু ব্যাক্টেরিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা যেত যেসব অন্যান্য ঔষধে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে।

কলিস্টিন এর বিরুদ্ধে ব্যাক্টেরিয়ার প্রতিরোধ গড়ে তোলাটা খুব-ই খারাপ সংবাদ আমাদের জন্য।

এই ব্যাক্টেরিয়াগুলা আমাদের শরীরের সর্বশেষ ও সর্বশক্তিশালী প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে ভেঙ্গে দিতে পার এবং অসংখ্য মানুষের মৃত্যু নিয়ে আসতে পারে।

কিভাবে এটা ঘটলো?

চায়না তে শুকর ফার্ম এ লক্ষাধিক পশুকে কলিস্টিন দেয়া হয়েছে বছরের পর বছর।

প্রতিরোধী ব্যাক্টেরিয়া প্রথমে তৈরি হয়ে পশু থেকে পশু তে ছড়ায়

তারপর মানুষে, অতর্কিতে/অদৃষ্টে।

পৃথিবীতে প্রতিদিন গড়ে ১০০,০০০ ফ্লাইট

গ্রহের প্রত্যেকটা মানুষকে সংযুক্ত করছে।

আধুনিক বিশ্ব তৈরির সাথে সাথে আমরা

পৃথিবীব্যাপি রোগ ছড়ানোর এক অবকাঠামো তৈরি করে ফেলেছি।

তারপরো, এখনি আমাদের আতংকিত হওয়ার প্রয়োজন নেই।

যত ব্যাক্টেরিয়া বিবর্তিত হচ্ছে, মানুষ গবেষণা করে তত উন্নত এন্টিবায়োটিক তৈরি করছে

যেহেতু পুরনো গুলো অকেজো হয়ে যাচ্ছে, প্রযুক্তি অগ্রসর হচ্ছে।

এই ব্যাক্টেরিয়া-এন্টিবায়োটিক প্রবলেমটা খুব-ই বাস্তব এবং সঙ্কটজনক, কিন্তু যুদ্ধ এখনো অনেক বাকি।

যদি মানবজাতি সঠিক ব্যবস্থা নিতে পারে, তবে মহাজীবাণু

তত বেশী শক্তিশালী নাও হতে পারে…।

এই ভিডিওটি বানানো সম্ভব হয়েছে Patreon.com এর দর্শকদের সহযোগীতায়

এবং Bill & Melinda Gates Foundation এর আর্থিক সহযোগীতায়।

আপনি যদি আমাদেরকে সহযোগীতা করতে চান এরকম আরো ভিডিও বানাতে…

Kurzgesagt পোস্টার অথবা মগ কিনতে পারেন অথবা ডোনেইট করতে পারেন Patreon.com এ

Thank you so much for your help!

Subtitles by the Amara.org community Translated by: Wroanee Faruque