আমরা কোন শহরে পারমানবিক বোমা ফেললে কি হবে? | Kurzgesagt

ভিডিও

ট্রান্সক্রিপ্ট

ভিডিওতে পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ে খেলা খুবই আনন্দদায়ক

কোন বিস্ফোরণ দেখতে একটি চোখের আনন্দ আছে

অগ্নিকুণ্ড, শব্দের ঢেউ এবং তেজস্ত্রিয়তার মতো জিনিসের ব্যাপারে আমাদের ভায়াবহ মুগ্ধতা কাজ করে

এবং এটি আমাদের ধ্বংসাত্মক শক্তির মনভাব এক দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখালেও

পারমাণবিক বিস্ফোরণের আসল প্রভাব বোঝার জন্য এটি সেরা উপায় নয়

এটি কোনো বোমার শহর বা বিস্ফোরণটি কতটা উজ্জ্বল হবে , এটি নিয়ে কথা নয়। পারমাণবিক অস্ত্র আপনাদের জীবনে কি প্রভাব ফেলবে তা নিয়ে

তাই আমরা রেড ক্রস এবং রেড ক্রিসেন্ট আন্দোলনের সাথে অংশিদার হয়েছি

এটা জানতে যে, কোনো বড় শহরে পারমাণবিক অস্ত্র বিস্ফোরণ ঘটলে আসলে কী ঘটবে

পারমাণবিক যুদ্ধ নয়, শুধু একটি বিস্ফোরণ

  • ইন্ট্রো *

আমরা আমাদের গল্প শুরু করবো একটা সাধারণ শহরের মধ্যে

মানুষ কাজ করতে যাচ্ছে, পরীক্ষার জন্য পড়াশোনা করছে, চিন্তাভাবনা এবং দৈনন্দিন কাজে মগ্ন সবাই

ঠিক এই মুহূর্তে একটি পারমাণবিক বোমা বিস্ফোরণ হলো এবং সময় থেমে গেলো

বিস্ফোরণের প্রথম পর্যায়ে ঘটবে এক সেকেন্ডেরও কম সময়ের মধ্যে

এক মিলিসেকেন্ডের মধ্যে, সূর্যের থেকেও উত্তপ্ত প্লাজমার একটি গোলক দেখা যায় এবং ঐ আগুনের গোলক ২ কিলোমিটারেরও বেশি জায়গা জুড়ে বিস্তৃত হয়

এই গোলকের মধ্যে, সবাই মারা নিশ্চিত মারা যাবে

একটি উত্তপ্ত কড়াইয়ে এক ফোটা পানি দেয়ার কথা ভাবুন

ফুশ…এবং তারপর দেখবো সব নাই হয়ে গেছে

বেশিরভাগ বিল্ডিং, গাড়ি, গাছ, ভাস্কর্য এবং মানুষ …

… সব বাষ্প হয়ে উড়ে যাবে

প্রথমে, আলোর ঝলক: তাত্ক্ষণিকভাবে শহর জুড়ে একটি তীব্র সুনামির ঝাক্কা বয়ে যাবে

যদি বিস্ফোরণের দিকে আপনি দোখ দেন,

তাহলে কয়েক ঘন্টার জন্য আপনি অন্ধ হয়ে থাকবেন

এই আলো যে তাপ নির্গত করে

তা এতো শক্তিশালী এবং উত্তপ্ত যে, এটি বিস্ফোরণের জায়গা থেকে ১৩ কিলোমিটার দূরে পর্যন্ত সব কিছু পুড়িয়ে দিবে

এর অর্থ হলো, ৫০০ বর্গকিলোমিটারের মধ্যে দহনযোগ্য সবকিছুই পুড়তে শুরু করবে

প্লাস্টিক, কাঠ, কাপড়, চুল এবং ত্বক।

আপনি যদি কাজে যাওয়ার জন্য এক মুহুর্তের জন্য বিস্ফোরনের যায়গার মধ্যে পরে যান

পরের মুহূর্তেই, আপনি ছাই হয়ে যাবেন

এখন দ্বিতীয় পর্যায় শুরু হবে

এটি কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে ঘটে

বেশিরভাগ মানুষ প্রথমে কিছুটা আন্দাজ করতে পারবে

কিন্তু তখন খুব দেরি হয়ে গেছে

আলোর ঝলকটার পরেই ঢেউটা আসবে

অগ্নিকুণ্ডের তাপ এবং বিকিরণ চারপাশে অতিতাপীয়-ঘন বুদ্বুদ তৈরি করবে

এটি এখন বিস্ফোরনের মাধ্যমে বিস্তার লাভ করবে

শব্দর গতির চেয়েও দ্রুত,

হারিকেন এবং টর্নেডোয়ের চেয়েও শক্তিশালী বাতাস তৈরি করবে

এর শক্তির তুলনায় অবকাঠামোগুলো কিছুই না

অগ্নিকুণ্ডের এক কিলোমিটারের মধ্যে বেশিরভাগ বড় বড় বিল্ডিংগুলি ধসে যাবে

শুধু ইস্পাতের কংক্রিট আংশিক চাপ প্রতিরোধ করতে পারবে

আশেপাশের পার্কগুলিতে, যেখানে অবসরপ্রাপ্ত মুরব্বিরা হাঁসকে খাওয়ান

সেকেন্ডের মধ্যে গাছগুলি কালো এবং ধ্বংস হয়ে যাবে

আপনি যদি বাইরে থাকেন তবে আপনি ধুলারকণার মত উড়ে যাবেন

ঢেউটা যত দূরে যাবে যাবে ততই দুর্বল হতে থাকবে

কিন্তু তবুও, প্রায় ১৭৫ বর্গকিলোমিটারের মধ্যে ঘরগুলি তাসের ঘরের মতো ধসে পড়বে

কয়েক হাজার মানুষ নিচে আটকে থাকবে যাদের তখন কিছু করারই থাকবেনা

গ্যাস স্টেশনগুলিতে বিস্ফোরণ হবে এবং সর্বত্র আগুন ছড়িয়ে পড়বে

অগ্নিকুণ্ডের ধুলো এবং ছাইয়ের অবশেষ থেকে একটি মাশরুম মেঘ তৈরি হবে

পরের কয়েক মিনিটে তা আকাশে ওঠবে এবং শহরটির উপরে একটি অন্ধকার ছায়া ফেলবে

এটি শহরের আশেপাশের বিশুদ্ধ বাতাসকে নিজের দিকে টানবে

যার ফলে আরও ভবন ধ্বংস হবে এবং অতিরিক্ত অনেক অক্সিজেন সরবরাহ করবে

এরপরে কী ঘটবে তা ঐ শহরের উপর নির্ভর করে

যদি পর্যাপ্ত জ্বালানী থাকে তবে আগুন শুধু জ্বলতেই থাকবে এবং ভিতরে মানুষ আটকা পরে থাকবে

এবং মানুষ ধ্বংস থেকে পালানোর চেষ্টা করছে।

বিস্ফোরণ থেকে ২১ কিলোমিটারের মধ্যে, আপনার মতো লোকেরা মাশরুমের মেঘের ছবি তুলতে তাদের জানালায় ছুটে যাবেন

কিন্তু তাদের ধারনাই থাকবে না ঢেউটা তাদের দিকেই আসছে

তীক্ষ্ণ কাচ ভাঙার মাধ্যমে তাদের জানালা ভেঙে চুরমার হয়ে যাবে

তৃতীয় পর্যায়টি কয়েক ঘন্টা পর বা কয়েকদিন পর শুরু হবে

আমরা এটা সব সময় মনে করি যে, যত কঠিন দুর্যোগই আসুক না কেনো। আমাদের সাহায্যে কেউ না আসবেই

কিন্তু এটা বাকি সব দুর্যোগের মত না: একটি পরমাণু বিস্ফোরণ হলো প্রতিটি প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সমষ্টি

লক্ষ লক্ষ লোক গুরুতর আহত হবে

কাটা, ভাঙা হাড়, গুরুতর দগ্ধ

পরের কয়েক মিনিট এবং ঘন্টাতে এইসব কারণে আরো হাজার হাজার লোক মারা যাবে

ভূমিকম্পের মতো ধসে পড়া ভবনগুলিতে আটকা পড়ে থকবে বা আলোর ঝলক দ্বারা অন্ধ হয়ে যাবে

তরঙ্গ ঢেউ থেকে বধির হয়ে যাবে এবং তারা ধ্বংসস্তূপ এবং ধ্বংসাবশেষ থেকে কোন মতেই পালাতে পারবে না

তারা আতঙ্কিত এবং ভয়াবহ অবস্থায় থাকবে

অবশ্যই বলা যায় হাসপাতালগুলো অন্যসব ভবনের মত মাটির সাথে মিশে যাবে

এবং বেশিরভাগ ডাক্তাররাও মৃত বা আহত অবস্থায় থাকবে

অন্য সবার মতই

পাতাল রেলের মানুষরা বেচে যেতে পারে

যদিও তারা পুরোপরি ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা নাও পেতে পারে

বোমার ধরণ, কোথায় এটা ফালানো হয়েছে এবং ঐ যায়গার আবহাওয়া পরিস্থিতি সবকিছুরই উপর নির্ভর করে

কালো বৃষ্টি শুরু হতে পারে

তেজস্ক্রিয় ছাই এবং ধূলো শহরে নেমে আসবে, যা সমস্ত কিছু ছেয়ে যাবে

অদৃশ্য, দূষিত, নীরব বিকিরণতার পালা তখন

প্রতিটি নিশ্বাস নেয়া মানি ফুসফুসে বিষ ঢুকানো

প্রথমদিকের দিনগুলিতে, বিকিরণের সংস্পর্শে সর্বাধিক ডোজ প্রাপ্ত ব্যক্তিরা মারা যাবেন।

কয়েক ঘন্টা বা এমনকি কয়েক দিনের জন্য সাহায্য করার কেউ থাকবে না

অবকাঠামো ধসে গেলে সমাজও ধসে যায়

রাস্তা অবরুদ্ধ, ট্রেনের বন্ধ, রানওয়ে বিদ্ধস্ত

পানি নেই, বিদ্যুৎ নেই,

যোগাযোগের কিছু নেই, দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় জিনিস পাওয়ারও উপায়ও নেই

আশেপাশের শহরগুলি থেকে সাহায্য আসতে অনেক কাঠ পোড়াতে হবে

আর যদি তারা আসতেও পারে তবুও তেজস্ক্রিয় দূষণের কারণে কাছে যাওয়া ঝুঁকিপূর্ণ হবে

পারমাণবিক হামলার পরে, আপনাকেই সব করতে হবে

সুতরাং, ধীরে ধীরে, মানুষ ধ্বংসস্তূপ থেকে বেরিয়ে আসতে শুরু করবে

তেজস্ক্রিয় আবর্জনা সহ

তারা নিস্তেজ, বেদনারত, মানসিকভাবে বিপর্যস্ত থাকবে, এবং তাদের সবারই দ্রুত খাদ্য, পানি এবং চিকিত্সার প্রয়োজন হবে

আগুন নিভলে বা আকাশ পরিষ্কার হলেই পারমাণবিক অস্ত্রর ক্ষতি তখনই শেষ হয় না

পার্শ্ববর্তী শহরগুলিতে হাসপাতালগুলি এরকম বড় বিপর্যয়ের জন্য প্রস্তুত থাকবেনা

যখন কয়েক লক্ষাধিক রোগী আহত অবস্থায় থাকবে

পরের সপ্তাহ, মাস এবং বছরগুলিতে,

যারা বেঁচে থাকবে, তারা অনেকেই লিউকেমিয়ার মতো ক্যান্সারে আক্রান্ত হবে

কোনও সরকার আপনাকে এই সমস্ত বিষয় নিয়ে ভাবাতে চায় না, কারণ এরকম ঘটনা ঘটলে এর মোকাবেলায় কোন আগাম প্রস্তুতি কারোরই নেই

পারমাণবিক হামলায় তাত্ক্ষণিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থদের সাহায্য করার কোনও উপায় নেই

এটি কোনও হারিকেন, দাবানল , ভূমিকম্প বা পারমাণবিক দুর্ঘটনা নয়।

এটি এই সমস্ত দুর্যোগের সমষ্টি, এমনকি আরো খারাপ

পৃথিবীর কোন জাতিই এটির মোকাবেলায় প্রস্তুত নয়।

গত কয়েক বছরে বিশ্ব অনেক বদলে গেছে, বিশ্ব নেতারা

সরাসরি এবং প্রকাশ্যে পরমাণু অস্ত্র নিয়ে একে অপরকে হুমকি দিচ্ছে

বহু বিশেষজ্ঞ মনে করেন যে এই কয়েক দশকের মধ্যে এখন পারমাণবিক হামলার আশঙ্কা সবচেয়ে বেশি

সরকার তাদের নাগরিকদের বলে যে, আমাদের কাছে পারমাণবিক অস্ত্র ভালোর জন্যই আছে

কিন্তু অন্যদের কাছে থাকা মানি খারাপ

আমাদের নিরাপত্তার খাতিরে অন্যদের ভয় দেখানোর জন্য এটা থাকা জরুরী

কিন্তু আপনি কি নিরাপদ বোধ করেন?

কয়েকজন ব্যাক্তির উদ্বত হওয়ার, বা ভুল বোঝাবুঝির উপর নির্ভর করে

এই অকল্পনীয় পর্যায়ের বিপর্যয়

ভিডিওতে বিস্ফোরন দেখতে অনেক ভালোই লাগে

কিন্তু বাস্তব জীবনে বিস্ফোরণ, না

যদিও এর সমাধান আছে!

সমস্ত পারমাণবিক অস্ত্র নির্মূল করা এবং এগুলি আবার নির্মাণ না করার শপথ করা

২০১৭ সালে, বিশ্বের সমস্ত দেশগুলির প্রায় ২/৩ ভাগ

শত শত নাগরিক সমাজ সংস্থা, আন্তর্জাতিক রেড ক্রস এবং রেড ক্রিসেন্ট আন্দোলন এর সমর্থনে

পারমাণবিক অস্ত্র নিষিদ্ধ এবং নির্মূল করতে সম্মত হন

কার কাছে পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে এবং কার কাছে নেই সেটি কোনো বিষয় নয়। মুল সমস্যা অস্ত্র নিজেই

এটি খুবই অনৈতিক এবং আমাদের সকলের জন্য একটি অস্তিত্বের হুমকি

আপনি কোন দেশের নাগরিক বা কোন রাজনৈতিক মতের সেটি বিবেচনাধীন নয়

আমাদের দাবি করা উচিত যে এগুলো চিরতরে নির্মুল হোক

চাপ ছাড়া এটি সম্ভব নয়

আপনি যদি এই আন্দোলনে অংশ হতে চান তবে এমন কিছু জিনিস রয়েছে াপনি করতে পারেন:

পারমাণবিক অস্ত্র এবং সেগুলি সম্পর্কে আপনি কী করতে পারেন তা জানার জন্য notonukes.org তে যান।

  • আউট্রো সংগীত *

  • আউট্রো*